গঙ্গা থেকে জমজম - একজন হিন্দু ব্রাহ্মণের হাদীস বিশারদ হয়ে ওঠার গল্প
গঙ্গা থেকে জমজম এই নিয়ে আমি "Islamic Solution - ইসলামিক কথা" এই ওয়েবসাইটে সুন্দর করে সাজিয়ে একটি পোষ্ট করছি। আমরা আজকে একজন হিন্দু ব্রাহ্মণের হাদীস বিশারদ হয়ে ওঠার গল্প সম্পর্কে জানব।
ভারতের কট্টর ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেওয়া বাঙ্কি লাল যে একসময় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন আলেম হবেন তা কি কেউ জানতো?
গঙ্গা থেকে জমজম
কৈশোরে ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই ছিল তার কাজ। কিন্তু দিন শেষে দেখা গেল তিনি তাঁর সময়ের একজন সেরা হাদীস বিশারদ হয়ে বসে আছেন! ইসলামের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি প্রাপ্ত সকল সহীহ হাদীসের একটা সংকলন করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি ইমাম বুখারীর পদাঙ্ক অনুসরন করেছেন। ইসলামের বিখ্যাত দায়ী জাকির নায়েকের তিনি সরাসরি শিক্ষক। মুসলিম হওয়ার পর তার নাম হয় জিয়াউর রহমান আজমী। ইসলামের সাথে আমার সাক্ষাত হয় কিছুটা নাটকীয় ভাবে।
দ্বীনে হক বা সত্য ধর্ম বাংলায় একমাত্র ধর্মদ নামে একটা ইসলামিক বই তার হাতে আসে। সেখানের প্রথম আয়াতটা তার চোখে পড়ে।
"নিশ্চয়ই, আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম হলো ইসলাম।" (সূরা আল ইমরান, আয়াত-৩)
এটা পড়ে তিনি অবাক হন। একজন হিন্দু হিসেবে তিনি বিশ্বাস করতেন সব ধর্মই মূলত ঈশ্বরকে পাওয়ার আলাদা আলাদা উপায়। তখন থেকে তিনি ইসলাম আর হিন্দু ধর্ম দুটোই ভালোভাবে জানার চেষ্টা করতে লাগলেন যাতে হিন্দু ধর্ম দিয়ে ইসলামকে ঘায়েল করতে পারেন। কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। আর তার পরপরই তার জীবনে আঘাতের আশঙ্কা দেখা দেয়। এজন্য তিনি হিজরত করেন উত্তর প্রদেশ থেকে তামিলনাড়ু। তিনি পড়াশোনা করেছেন মদিনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মক্কার আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। একাধিক পিএইচডি করেছেন। তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম হিন্দু রিভার্ট হিসেবে ছাত্রত্ব পান। এমনকি তিনি মদিনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদিস বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মসজিদে নববীর একজন খতিবও ছিলেন। কি অসাধারণ এক যাত্রা!
তার লেখা বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২০ টার মত। প্রায় ১৬৮০০ সহি হাদিসের ১২ খন্ডের সংকলন গ্রন্থ যেটি জামে কামিল নামে পরিচিত। সেটিই তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় কাজ। তার আত্মজীবনী গ্রন্থের নাম গঙ্গা থেকে জমজম। তার মৃত্যু হয়েছিল বছরের একটা শ্রেষ্ঠ দিনে। আরাফাতের দিন। তাও জোহরের আযানের সময়। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ২০২০ সালে। পৃথিবী হারিয়েছে যুগশ্রেষ্ঠ একজন আলেমকে। আল্লাহ তাআলা মুহতারাম কে জান্নাত নসিব করুন।
পোস্টটি যে কোন সোশাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
"কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াব এর অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবে না" [সহিঃ মুসলিম- ২৬৭৪]
