তারাবির নামাজ কত রাকাত সহি হাদিস । তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম;
তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন
তারাবির নামাজ কত রাকাত ও তারাবির নামাজের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে আমি "Islamic Solution - ইসলামিক কথা" এই ওয়েবসাইটে সুন্দর করে সাজিয়ে একটি পোষ্ট করছি। তারাবির নামাজ কত রাকাত ও তারাবির নামাজের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জেনে না থাকলে পোস্টটি সম্পুর্ন পড়ুন। আশা করি উত্তর পেয়ে জাবেন।
তারাবির নামাজের ইতিহাসঃ রমজান মাসে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে নামাজ আদায় করা হয়, একে ‘তারাবি নামাজ’ বলে। আরবিতে ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। শরিয়তের ভাষায় মাহে রমজানে তারাবির নামাজ পড়ার সময় প্রতি দুই রাকাত অথবা চার রাকাত পরপর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই ‘তারাবি’।
তারাবির নামাজ কত রাকাত: আজকে তারাবির নামাজ কত রাকাত ও তারাবির নামাজের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে "ইসলামিক কথা" এই ওয়েবসাইটে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। যেহেতু এই মর্মে অনেক মতভেদ আলেমদের মাঝে দেখা যায়। তাই আজকের আলোচনা থেকে আপনারা সহজেই তারাবির নামাজ কত রাকাত ও তারাবির নামাজের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবেন ইনশাআল্লাহ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবনের শেষ রমাদানে একদিন রাতে মসজিদে যান। একা একা তারাবির নামাজ পড়েন। তিনি কাউকে নামাজ পড়তে বলেননি, কিন্তু সাহাবীরা তার দেখাদেখি নামাজ পড়ে। এর পরের দিন দেখা গেল, সাহাবীদের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। চতুর্থ রাতে মসজিদে তিল ধারণের জায়গা ছিল না, কিন্তু সেদিন রাসূল (সাঃ) মসজিদে গেলেন না। ফজরের নামাজ পড়ে তিনি উপস্থিত মুসল্লিদের কে বললেনঃ
❝শোনো আমি জানতাম তোমরা সারারাত ধরে এখানে আছো, কিন্তু আমি আসিনি। এই নামাজ তোমাদের উপর ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি বিধায় আমি বের হইনি। আর তোমরা তা আদায় করতে অপারগ হয়ে পড়তে পারো।❞
এরপর রাসূল (সাঃ) ইন্তেকাল করেন এবং তারাবির নামাজের বিষয়টি অমীমাংসিত থাকে।
তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল
আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) বলেনঃ
তিনি একদা আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রমজানের রাতের সালাত কেমন ছিল? তিনি উত্তরে বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযান মাসে এবং রামাযানের বাইরে ১১ রাকাতের বেশি সালাত আদায় করতেন না। তিনি প্রথমে (২+২) চার রাকাত পড়তেন। অতঃপর তিনি আবার (২+২) চার রাকাত পড়তেন। অতঃপর তিনি তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন। সহীহ মুসলিম ২০১৩
হাদিসটি প্রায় সকল হাদীস গ্রন্থেই বর্ণিত হয়েছে। এর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনার প্রশ্নই উঠে না। কারণ ইমাম বুখারী (১৯৪-২৫৬ হিঃ) ও মুসলিম (২০৪-২৬১ হিঃ) স্ব স্ব সহীহ গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে ইমাম বুখারী (রহঃ) হাদিসটি তারাবীর সালাত অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। তিনি রামাযান ও অন্য মাসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাত্রির সালাত অধ্যায়েও হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও অন্য আরেকটি অধ্যায়ে ভিন্ন সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
সাহাবীদের যুগে তারাবীহর নামাজ কত রাকাত ছিল?
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময় বিষয়টি আলোচনায় আসেনি। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময়েও প্রথম বছরে তারাবির নামাজ নিয়ে কোনও কথা ওঠে নি। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খেলাফতের দ্বিতীয় বছর রমজানে তিনি মসজিদে ঢুকে দেখেন, মুসল্লিরা এলোমেলোভাবে নামাজ পড়ছেন। কেউ একা একা, কেউ ছোট ছোট জামাতে নামাজ পড়ছেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু চাইলেন, সবাই এভাবে এলোমেলো না হয়ে একজন ইমামের পিছনে নামাজ পড়ুক। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু উবাই ইবনে কা'ব রাদিয়াল্লাহু আনহু কে নিযুক্ত করেন তারাবির নামাজ পড়ানোর জন্য। তারপর সবাই এক জামাতে তারাবির নামাজ পড়া শুরু করে। দৃশ্যটি দেখে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ❝কতইনা সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা।❞
আরও পড়ুনঃ
- হযরত উমর (রাঃ) এর ন্যায় বিচার এর ঘটনা
- এপ্রিল ফুল মুসলমানদের রক্তাত্ব সঠিক ইতিহাস
- সিগারেট খাওয়া হারাম কেন
ইতিহাসের বইগুলোতে লিপিবদ্ধ আছে, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু পুরুষদের তারাবির নামাজের জন্য দুইজন ইমাম নিযুক্ত করেন এবং নারীদের নামাজের জন্য আরেকজন ইমাম নিযুক্ত করেন।
প্রথমদিকে তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়া হত, সাথে তিন রাকাত বিতর। সব মিলিয়ে ১১ রাকাত। কিন্তু তার খেলাফতের শেষ দিকে তিনি ৮ রাকাত থেকে বাড়িয়ে ২০ রাকাত করেন। তিন রাকাত বিতর সহ মোট ২৩ রাকাত।
ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কেন তারাবির নামাজ ২০ রাকাত এর প্রচলন করেন?
এই প্রশ্নের উত্তর দেন আন্দালুসের বিখ্যাত স্কলার আল-বাজি রাহিমাহুল্লাহ। তিনি বলেনঃ
❝ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এটা মানুষদের জন্য যাতে সহজ হয় সেজন্য করেছেন। কারণ, ৮ রাকাত তারাবির নামাজ এত লম্বা হতো যে, মানুষের পায়ে ব্যথা হতো। দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ থাকতে হতো। এজন্য তিনি ৮ রাকাত থেকে তারাবির নামাজ ২০ রাকাত করেন।❞
মানুষজন তখন আর একটা জিনিস এর প্রচলন করে। প্রতি চার রাকাত পর তারা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার নামাজ শুরু করতো।
তারাবির নামাজে বিরতির ভিত্তি কি?
হাদিসে আছে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের নামাজের বিবরণে বলেনঃ ❝তিনি চার রাকাত নামাজ পড়তেন, তারপর বিশ্রাম নিতেন। অতঃপর আবার চার রাকাত পড়তেন।❞
ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময় এই হাদীসের উপর ভিত্তি করে তারাবির নামাজ এর মাঝখানে বিশ্রাম নেওয়া হতো, এটাকে আরবিতে বলে 'তারউইহা'। এই তারউইহা থেকে তারাবি এসেছে। যার মানে হল অনেকগুলো ব্রেক বা বিশ্রাম।
ওমর ইবনুল খাত্তাব কেন তারাবির নামাজ ২০ রাকাতের প্রচলন করেন এটার আর কোন কারণ জানা যায়নি।
সৌদি আরবে তারাবিহর নামাজ কত রাকাত
খেলাফতের রাজধানী মদিনায় তখন ২০ রাকাত তারাবির নামাজ হত, মক্কায়ও তখন ২০ রাকাত তারবির নামাজ হত। এমনকি বর্তমান সময়েও মক্কা-মদিনায় ২০ রাকাত তারাবির নামাজ প্রচলিত। কয়েক বছরের মধ্যে মক্কায় তখন আরেকটি কাজের প্রচলন দেখা দেয়। মক্কার লোকেরা চার রাকাত এর মধ্যে ব্রেকে তাওয়াফ করা শুরু করে। অনেকেই বলতে পারেন, এত কম সময়ের মধ্যে তাওয়াফ করা কিভাবে সম্ভব?
তখন মূলত এত জনসমাগম ছিল না, হৈ-হুল্লোড়ও ছিলনা। মক্কার লোকেরা তারাবির নামাজ পড়তো ২০ রাকাত, পাশাপাশি তাওয়াফও করতে পারত। এই খবরটি যখন মদিনার লোকেরা জানতে পারল, তখন তারা চিন্তা করল আমরা তো তাওয়াফ করতে পারবোনা। তাই তারা ২০ রাকাত এর সাথে আরও ১৬ রাকাত তারাবির নামাজ পড়া শুরু করল। সব মিলিয়ে ৩৬ রাকাত তারাবী, তিন রাকাত বিতর মিলিয়ে ৩৯ রাকাত। এটা ছিল তাবেঈ, তাবে-তাবেঈদের যুগে।
ইমাম জাফরানি ইমাম আশ-শাফে'ঈ রাহিমাহুল্লাহকে তারাবির নামাজের রাকাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ইমাম শাফে'ঈ বলেনঃ
❝আমি মদিনার লোকদেরকে ৩৯ রাকাত পড়তে দেখেছি এবং মক্কার লোকেদেরকে ২৩ রাকাত। তুমি এই দুটোর যেকোনো একটা ফলো করতে পারো, কোন অসুবিধা নেই।❞
এ সংক্রান্ত আরেকটি তথ্য হচ্ছে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর আযাদকৃত দাস না'ফে রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
❝মদিনার মানুষকে আমি ৩৯ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তে দেখেছি, যার মধ্যে তিন রাকাত বিতর নামাজ অন্তর্ভুক্ত।❞
পূর্ববর্তী আলেমগণ আলোচনা করতেন তারাবিহর নামাজ কত রাকাত পড়া 'উত্তম' এটা নিয়ে। বেশিরভাগ বলতেন বিশের (২০+৩) পক্ষে। কারন, এটার উপর সাহাবীদের ইজমা ছিল। ওমর ইবনুল খাত্তাব এর আমল থেকে এটা প্রচলিত।
তারাবির নামাজ পড়া কি বাধ্যতামূলক?
তারাবির নামাজ আদায় করার জন্য কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটা এমন না যে ২০ রাকাতই পড়তে হবে বা ৩৯ রাকাতই পড়তে হবে। তারাবির নামাজ এর ক্ষেত্রে যত বেশি পারবেন পড়বেন। কোন কারনে পড়তে অপারগ হলে যতটুকু পারেন পড়ুন। একেবারে অপারগ হলে পড়বেন না। না পড়তে পারলে গুনাহ হবে না।
ইসলামের তেরশো বছরের ইতিহাসে এটা নিয়ে কোন ঝামেলা ছিল না। এটা নিয়ে প্রথম ঝামেলা শুরু হয় গত শতাব্দীতে! এটা একটি আধুনিক বিতর্ক।
গত শতাব্দীর একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস, একজন দক্ষ আলেম রাহিমাহুল্লাহ
প্রথমবারের মতো দাবি করলেন- তারাবির নামাজ
২০ রাকাত হল বিদআত! এর আগে
কেউ এমন দাবি করেননি।
শায়খ ইবনে উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ ❝যে বলে ৮ রাকাতের বেশি তারাবি পড়া বিদআত, সে নিজেই আসলে বিদআত করছে। কারণ এর আগে কোন আলেম এটাকে বিদআত বলেননি।❞
এমনকি একবার একজন সাহাবী এসে জিজ্ঞেস করলেন, ❝ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি কিভাবে রাতের নামাজ আদায় করবো?❞
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ❝দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করবে। আর যদি আশঙ্কা করো ফজরের সময় হয়ে যাচ্ছে, তখন বিতর পড়া শুরু করবে।❞
এই মতটিই ছিল দীর্ঘ তেরশো বছর ধরে মুসলিম উম্মাহর মত। এই তেরোশো বছরে কেউ কখনও বলেনি তারাবির নামাজ ২০ রাকাত পড়া বিদআত।
সুতরাং, আপনাকে কেউ এসে যদি বলে, ❝তুমি বিশ রাকাআত পড়ছো কেন? তুমি কি জানো না ২০ রাকাত পড়া বিদআত?❞ তাহলে আপনি জবাবে বলবেন- ❝ধন্যবাদ। আপনি ৮ রাকাত পড়ুন, আমি ২০ রাকাত পড়ি।❞ এটা নিয়ে ঝগড়া করার কোন দরকার নেই।
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
তারাবির নামাজ নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (তবে পুরুষ মসজিদে জামাতের সাথে আর মহিলাগণ ঘরে পড়বে।) কেননা খোলাফায়ে রাশেদীন (বিশেষ করে উমর রাযি.-এর খেলাফতের শেষ জামানা থেকে) মুয়াযাবাত তথা নিয়মিত তারাবির নামাজ পড়তেন। আর রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন যে, عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدي عضوا عليها بالنواجذ “তোমরা আমার সুন্নতকে আঁকড়ে ধর এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতকে আঁকড়ে ধর। তার উপর তোমরা অটুট থাক।” (আবু দাউদ ৪৬০৭, তিরমিজী ২৬৭৬)
এজন্য ইমাম নববী বলেন, صلاة التراويح سنة بإجماع العلماء আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী তারাবির নামাজ পড়া সুন্নত। (আলমাজমূ ৪/৩১)
সুন্নতে মুয়াক্কাদা কি?
সুন্নতে মুয়াক্কাদা হচ্ছে এমন সুন্নাহ যে সুন্নাহর ব্যাপারে বিশ্ব নবি (সাঃ) তাগিদ দিয়েছেন। তাগিদ শব্দের অর্থ মুয়াক্কাদা।
তারাবির নামাজের নিয়ত
তারাবির নামাজ আদায়ের পূর্বে আমাদের কে নিয়ত করতে হবে। নিয়ত
করতে হবে কিভাবে খুব খেয়াল করে পড়বেন এবং বুঝবেন।
নিয়ত মূলত অন্তরের সংকল্পের নাম।
মুখে উচ্চারণের নাম নিয়ত নয়। এই বিষয়টা আমাদের বাঙালি কমিটির অনেকে
বুঝলেও না বুঝার ভান করেন অথবা ভুল বুঝে থাকেন। অনেকে আরবিতে একটা মুখস্থ
নিয়ত পাঠ করেন। বলেন যে নিয়ত পাঠ করেছি। মক্তব গুলোতে এ নিয়ত পাঠ না
করার জন্য শিশুদের কে মারধর করা হয়। আসলে নিয়ত মুখে উচ্চারণের নাম নয়।
অন্তরে সংকল্প করার নামই হল নিয়ত। তো আমরা যখন তারাবির নামাজ পড়ার জন্য
জায়নামাজে দাঁড়াবো কেবলা মুখী হয়ে তখন নিজের ভাষায় অন্তরে এতোটুকু
সংকল্প করতে হবে যে,
এতটুকু কথা নিজের অন্তরে অনুধাবন করলেই চলবে। অথবা অন্তরে অনুধাবনের
পাশাপাশি মুখে যদি মৌখিকভাবে স্বীকৃতি দিই তাও ভাল। মুখে উচ্চারণ না করলেও
সমস্যা নেই। এতোটুকু কথা নিজের ভাষায় যদি অন্তরে সংকল্প করতে পারেন তাহলে
এটাই হবে নিয়ত। আর নিয়ত বলতে মূলত এটাই বোঝায় মুখে নয় অন্তরে
সংকল্প।
❝আমি এখন দুই রাকাত সুন্নত তারাবীর নামাজ আদায় করতেছি।❞
তারাবির নামাজের সহীহ নিয়ম
এশা’র নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নত আদায় করার পর এবং বেতর নামাজের আগে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়।
একনজরে
- এশার চার রাকাত সুন্নত।
- এশার চার রাকাত ফরজ।
- এশার দুই রাকাত সুন্নাত।
- দুই রাকআত দুই রাকআত করে তারাবির সালাত।
- এশার তিন রাকাত বেতর।
তারাবি নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া
আমরা যারা তারাবির নামাজ পড়বো, প্রতি রাতের মত এই রাতেও এশার নামাজ শেষ করার পরে বেতরের নামাজের পূর্বে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়বো। এরপর তারাবির সুন্নত নামাজের নিয়ত করে, আমরা আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে যাবো। এভাবে দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে থাকবো। দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়ার পরে চার রাকাত হয়ে গেলে আমরা একটা বিশ্রাম নিতে পারি। তারাবির শব্দের অর্থ যেহেতু বিশ্রাম নেওয়া, অতএব দুই রাকাত দুই রাকাত করে শেষ হওয়ার পরে, চার রাকাত যখন শেষ হয়ে যাচ্ছে তখন আমরা একটু বিশ্রাম নিতে পারি। এই বিশ্রাম নেওয়ার সময় একটি নির্ধারিত দোয়া পাঠ করা হয়। এর কোনো বিশুদ্ধ হাদিস নেই। গ্রহণযোগ্য কোন হাদিসে এই দোয়াটা বর্ণিত হয়নি। অতএব এই দোয়াটি পড়ার কোন প্রয়োজন নেই। তবে যারা পড়তে চান পড়তে পারেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই। এই ব্যাপারে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেনঃ
তারাবির মাসায়ালা
- মাসয়ালা: বিশ রাকাত তারাবির নামাজ বালেগ পুরষ-মহিলা সবার ওপর সুন্নতে মোয়াক্কাদা। অসুস্থ ও রুগী ব্যক্তির ওপর তারাবি জরুরি নয়, তবে কোনো কষ্ট না হলে তাদেরও পড়া মুস্তাহাব। -রদ্দুল মুহতার: ১/৭৪২
- মাসয়ালা: তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করা মুস্তাহাব, একাকি আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে: ১/২৯০
- মাসয়ালা: কারো যদি তারাবির জামাত থেকে কিছু রাকাত ছুটে যায় তাহলে বেতরের নামাজের পর তা পড়ে নিবে। -রদ্দুল মুহতার: ২/৪৪
- মাসয়ালা: নাবালেগ হাফেজের পিছনে বালেগ পুরুষ মহিলা কারো জন্যই ইক্তিদা করা বৈধ নয়। -মাজমাউল আনহুর: ১/১৬৭, হেদায়া: ১/২৩৮, আল বাহরুর রায়েক: ১/৩৫৯
চুড়ান্ত কথা
তারাবির নামাজ কত রাকাত ও তারাবির নামাজের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আশা করি পেয়ে গেছেন। মাহে রমজানের রাতে তারাবি নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রতিদিন মসজিদে সমবেত হন। দেশের প্রতিটি মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতমে তারাবি পড়ার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ রোজার প্রথম ছয় দিন দেড় পারা করে ও পরে লাইলাতুল কদর পর্যন্ত বাকি ২১ দিন এক পারা করে তিলাওয়াত করার পরামর্শ দিয়েছে। যেন স্থান পরিবর্তন করলেও কোনো মুসল্লি খতমে তারাবিতে কোরআন তিলাওয়াতে শরিক হওয়ার ধারাবাহিকতা থেকে বঞ্চিত না হন। আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন, আর বেশি বেশি আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Motkotha 8 rakat ba 20 rakat 1ta porlai holo.
হ্যাঁ।